পুরুষের আয়ু কমে যায় সম্পর্ক বিচ্ছেদে!

 

সৈয়দা সুলতানা : অনেক সম্পর্কেরই ইতি টানতে হয় নানা কারণে। আর এভাবেই ভাঙা গড়ার মধ্যে দিয়েই বয়ে চলে প্রতিটা সম্পর্ক।  যদিও সম্পর্কে বিচ্ছেদ হোক এটা কারও কাম্য নয়। তবুও সাধারণত যে কোন সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরেও এর বিশাল একটা প্রভাব পড়ে।

 

এর পাশাপাশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপরেও। এমনটিই বলছে গবেষণা। বিশেষ করে বিচ্ছেদের কারণে পুরুষদের স্বাস্থ্যের ওপরে অত্যন্ত খারাপ একটি প্রভাব পড়ে। যা তাদের আয়ুও কমিয়ে দিতে পারে।৪৮ থেকে ৬২ বছর বয়সী ৪ হাজার ৮০০ জনের ওপর করা কোপেনহেগেন ইউনিভার্সিটির গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

 

১৯৮৬ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত যারা বিচ্ছেদের ফলে একা থেকেছেন তাদের ওপর করা হয় এ গবেষণা।বিবাহিত পুরুষদের স্বাস্থ্য অবিবাহিত, বিপত্নীক বা বিবাহবিচ্ছিন্ন পুরুষদের থেকে বেশি ভালো বলে জানা গেছে।

 

এমনকি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, জীবন সঙ্গী আছেন এমন পুরুষ জীবন সঙ্গীহীন পুরুষদের থেকে বেশি দিন বাঁচেন। গবেষকদের দাবি, যেসব পুরুষ কোনো সঙ্গী ছাড়াই জীবন কাটাচ্ছেন তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা প্রায় ৮২ শতাংশ বেশি।

 

এ ছাড়াও ডাইমেনশিয়ায়ও এদের আক্রান্তের হার বেশি। এমনকি অবিবাহিত, বিবাহবিচ্ছিন্ন ও বিপত্নীক পুরুষদের মধ্যে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চার অভাব দেখা গেছে। তাদের মধ্যে ধূমপান ও মদ্যপানের মতো সমস্যা বেশি দেখা যায় বলেও মত গবেষকদের। এসব অভ্যাসের কারণেই শরীরে বাসা বাঁধে বিভিন্ন রোগব্যাধি। যা তাদের আয়ু কমিয়ে দিতে পারে।

 

ডেনমার্কের সাম্প্রতিক এই গবেষণাটি জার্নাল অব এপিডেমিওলজি অ্যান্ড কমিউনিটি হেলথে প্রকাশিত হয়েছে। ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিকে লুন্ড হলেন গবেষণার অন্যতম প্রধান লেখক। তিনি বলেন, ‘একাকিত্ব পুরুষের অনিয়মিত জীবনযাত্রার কারণে বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হন। যা তাদের মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।’

 

অন্যদিকে নারীদের মধ্যে যারা একাধিক সম্পর্কের ভাঙনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, বা দীর্ঘ সময় একা কাটিয়েছেন তাদের মধ্যে তেমন কোনো শারীরিক ব্যাধি দেখা দেয়নি। এ বিষয়ে অধ্যাপক লুন্ড বলেছেন, ‘বিচ্ছেদ বা বিচ্ছেদের পর নারীর পরিবার ও তার বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে ভালো সমর্থন পাওয়ার প্রবণতা থাকে।

 

যা তাদের স্বাস্থ্যের ওপর চাপের প্রভাব কাটিয়ে দেয়।’ ‘অন্যদিকে পুরুষরা তাদের মানসিক অবস্থায় খারাপ প্রভাব ফেলে, তাদের আবেগ কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করেন না। তাদের যন্ত্রণা নিজেদের মধ্যেই গোপন রাখেন।